নিয়ম-শৃঙ্খলা
”শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতার মাঝেই লুকিয়ে আছে মুক্তি আর সাফল্যের চাবিকাঠি”
অঙ্গীকার
হোস্টেলে প্রবেশ- প্রস্থান
অভিভাবকদের সাক্ষাৎ ও অবস্থান
হোস্টেল কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে অভিভাবকগণ মাসের যে কোন শুক্রবার, শনিবার এবং যে কোন বন্ধের দিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা করার সুযোগ পাবেন। সেক্ষেত্রে ওয়েটিং রুমে বসে সাক্ষাৎ করতে হবে। কোন অবস্থাতেই অভিভাবক/রিলেটিভ/ বন্ধু কেহই রাতে হোস্টেলে অবস্থান করতে পারবেন না। বিশেষ প্রয়োজনে তাদের অবস্থান ও খাবারের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম মেনে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। তাছাড়া কোন শিক্ষার্থীও অনুমতি ব্যতিত অন্যত্র রাত্রি যাপন করতে পারবে না।
কলেজে উপস্থিতি/ অনুপস্থিত প্রসঙ্গে
আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই হোস্টলে অবস্থানকালে কোন অবস্থায় কোন ছাত্র কলেজে অনুপস্থিত থাকতে পারবে না। ছাত্ররা নির্দিষ্ট সময় নিজ নিজ কলেজে উপস্থিত থাকতে হবে এবং কলেজ ছুটির পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হোস্টেলে ফিরে আসা বাধ্যতামূলক এক্ষেত্রে কোন ওজর আপত্তি চলবে না। শুধুমাত্র গুরুতর অসুস্থতার ক্ষেত্রে কলেজে অনুপস্থির বিষয়টি বিশেষ বিবেচনা করা যেতে পারে।তাও আবার হোস্টেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে।
হোস্টেল বাস সার্ভিস
কলেজ, প্রাইভেট ও কোচিং
আমাদের হোস্টেলের ছাত্রদের বাহিরে গিয়ে প্রাইভেট / কোচিং এর প্রয়োজন পরে না কিন্তু ছাত্ররা চাইলে বাহিরে গিয়ে প্রাইভেট ও কোচিং করার সুযোগ আছে। সেন্ট যোসেফ ও নটর ডেম কলেজসহ বিভিন্ন স্বনামধন্য কলেজের শিক্ষক, বুয়েট ও মেডিকেলের ছাত্রদের কাছে হোস্টেলের নিজেস্ব শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শ্রেনিকক্ষে প্রাইভেট ও কোচিং এর সুব্যবস্থা রয়েছে। কলেজ, প্রাইভেট ও কোচিং ছাড়া অন্য কোন কারণে হোস্টলের বাহিরে যাওয়া যাবেনা। শুধুমাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য বই, খাতা, কলম অথবা টিফিনের জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বাহিরে যাওয়া যাবে। অবশ্যই তার জন্য রেজিস্টার খাতায় লিপিবদ্ধ করে যেতে হবে।
ছুটি সংক্রান্ত
নিরাপত্তা
বর্তমান সময়ে নিরাপত্তা বিষয়টি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। তাই আমাদের ক্যাম্পাসের ভিতর রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা যা সিসিটিভি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। রাত দশটার সময় টাইম আটেন্ডেন্স মেশিনের মাধ্যমে প্রত্যেক ছাত্রের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। কলেজে যাওয়ার পূর্বে ফিঙ্গার রিডার মেশিনে পাঞ্চ করে কলেজে যেতে হয় এবং কলেজ থেকে ফিরে আসার পর ফিঙ্গার রিডার মেশিনে ফিঙ্গার পাঞ্চ করে হোস্টেলে প্রবেশ করতে হয়। প্রত্যেকটি ফ্ল্যাটের সামনে রয়েছে সিসি ক্যামেরা।
পড়া-শোনা মনিটরিং
মনিটরিং শিক্ষকগণ নিয়মিত হোস্টেলের ছাত্রদের পড়ালেখা মনিটরিং করে থাকেন। প্রত্যেক ছাত্রকে একটি ডেইলি রুটিন অনুসরণ করতে হবে । প্রত্যেক ছাত্রকে হোস্টেল থেকে একটি রুটিনের চার্ট প্রদান করা হবে। ডেইলি রুটিনটি ছাত্র স্বহস্তে পূরণ করতে হবে। সে সন্ধ্যায় কত ঘন্টা লেখাপড়া করবে। সকালে কত ঘন্টা লেখাপড়া করবে, সে রাতে কত ঘন্টা লেখাপড়া করবে, কখন সে বিশ্রাম নেবে, কখন সে ঘুমাবে, কখন সে সকালের নাস্তা করবেন, কখন সে দুপুরের খাবার খাবে, কখন সে রাতের খাবার খাবে, প্রত্যেকটি বিষয়ে ডেইলি রুটিনের মধ্যে উল্লেখ থাকতে হবে। মনিটরিং শিক্ষকগণ নিয়মিত তদারকি করবেন ছাত্র সেই রুটিন অনুযায়ী কাজ করে কিনা। তা না হলে বিষয়টির মনিটরিং শিক্ষকগণ সাথে সাথে হোস্টেল পরিচালক ও অভিভাবকগণকে অভিহিত করতে বাধ্য থাকিবেন । মনিটরিং শিক্ষকগণ যে কোন সময় পড়া-লেখার খোঁজ-খবর নেয়ার জন্য কক্ষে প্রবশে করতে পারবেন এবং প্রত্যেক ছাত্র লেখা-পড়া বিষয়ক মনিটরিং শিক্ষকগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে বাধ্য থাকিবেন। পড়ালেখার ক্ষেত্রে কোন মিথ্যার আশ্রয় বা অবহেলা কিংবা গাফলতি করা যাবে না। পড়া-লেখার মানন্নোয়নের ব্যাপারে র্কতৃপক্ষের গঠনমূলক পরার্মশ ও উপদশে মেনে চলা প্রত্যেক ছাত্রের জন্য বাধ্যতামূলক।
হালাল খাবার
হোস্টেলের খাবার সম্পর্কে সাবধান! স্টুডেন্টস গার্ডেন শতভাগ হালাল খাবারের নিশ্চয়তা প্রদান করেন। আমাদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে হোস্টেলের সব ধরনের খাদ্য-দ্রব্য ক্রয়, পশু হালাল উপায়ে জবাই এবং রান্না করা হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা হালাল উত্তম রিজিক আহার কর। হালাল খাবারকে হারামে পরিণত কর না। তোমাদের উপর মৃত জন্তু,রক্ত, শুকরের গোস্ত এবং আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো নামে যবেহকৃত প্রাণী তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। সূরা -বাকারা আয়াত: ১৭২। আপনার সন্তানকে হোস্টেল রাখার পূর্বে অবশ্যই যাচাই-বাছাই করে দেখতে হবে যে আপনি আপনার সন্তানকে যে হোস্টেলে রাখবেন সেই খাবার হালাল না হারাম। কোন পিতা-মাতা জানা সত্বে তার নিষ্পাপ সন্তানকে হারাম খাবার খাওয়াবেন না। এ কথা বলার পিছনে অবশ্যই কোন না কোন কারণ আছে। একমাত্র মুসলীম ছাত্রাবাসগুলোই আপনাকে শতভাগ হালাল খাবার প্রদানের নিশ্চয়তা দিতে পারে।
খাবার নিয়ম
অসুস্থতা প্রসঙ্গে
জরুরী অবস্থা
আচার আচরণ ও পোশাক পরিচ্ছেদ
ছাত্ররা হোস্টেলের স্টাফের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ থেকে বিরত থাকতে হবে। পক্ষান্তরে কোন স্টাফের ত্রুটি ধরা পড়লে তা নিজেই ব্যবস্থা না নিয়ে সাথে সাথে পরিচালক মহোদয়কে অবহিত করতে হবে। এক্ষেত্রে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকিবে। এছাড়া প্রত্যেক ছাত্রের মার্জিত পোশাক পরিচ্ছেদ পরিধান করা, শালীনভাবে চলাফেরা করা এবং সর্বদা ভদ্র আচরণ করা বাধ্যতামূক। এতে প্রত্যেকের বংশ মর্যাদার পাশাপাশি আবাসনের চারপাশের পরিবেশ সুন্দরভাবে ফুটে উঠবে। মাথার চুল কোন অবস্থাতেই বড় রাখা যাবে না এবং আপত্তিকর ডিজাইনে কাটা যাবে না । তাছাড়া অশালীন ড্রেসআপ সর্ম্পূণরূপে নিষেধ।
পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা
সব সময় মনে রাখতে হবে পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। নিজ নিজ পোশাক পরিচ্ছদ পরিস্কার করা , বিছানার চাদর, পড়ার টেবিল ইত্যাদি গুছিয়ে রাখা সকল ছাত্রের দায়িত্ব। এছাড়া ফ্লোর ময়লা না করা ও বাথরুম ব্যবহারের পর পর্যাপ্ত পানি ঢালার ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে । ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট ঝুঁড়িতে ফেলতে হবে। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিয়মিত বিছানার চাদর, বালিশের কভার, রুম, বাথরুম ও বারান্দা পরিষ্কার করে দেবে। ছাত্রকে শুধুমাত্র নিজের পোশাক নিজে পরিষ্কার করতে হবে। বাকি সব হোস্টেল কর্তৃপক্ষ করে দেবে।
বিদ্যুৎ ও পানি অপচয়
রাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত পরিবেশ
স্টুডেন্টস গার্ডেন সর্ম্পূণ রাজনীতি মুক্ত, ধূমপানমুক্ত, মাদক মুক্ত, একটি অসাম্প্রদায়িক ছাত্র হোস্টেল। হোস্টেলের ভিতরে বা বাহিরে কোনভাবেই ধূমপান / মাদক সেবন করা যাবে না। যে সকল ছাত্র ধূমপান/ মাদক সেবন করে তাদের এই হোস্টেলে ভর্তির জন্য আবেদন করার কোন প্রয়োজন নেই। কোন ছাত্র যদি হোস্টেলের বাহিরে অথবা ভিতরে ধূমপান/ মাদক সেবন করেন এবং হোস্টেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবহিত হয়। তাহলে তাকে হোস্টেল থেকে তৎক্ষণাৎ বহিষ্কার করা হবে এক্ষেত্রে কোন ধরনের ওজর আপত্তি চলিবে না।
নিষিদ্ধ দ্রব্য ব্যবহার
হোস্টেলে অস্ত্র, কাঁচি, চাকু, ক্যামেরা, সিডি, ভিসিডি, মাইক্রোফোন, সিডি প্লেয়ার, নোটবুক, লেপটপ, ডেস্কেটপ, ওয়াটার হিটার, আয়রন, রেকডার, এমপি-৩/এমপি-৪/এমপি-৫ সহ অন্য যে কোন ধরনরে আগ্নেয়াস্ত্র, ইলেক্ট্রনিক দ্রব্য, সিগারেট, তাস, দাবা, লুডু, গিটার ইত্যাদি রাখা ও ব্যবহার করা সর্ম্পূণ নিষিদ্ধ।
রাজনীতি ও ধূমপান মুক্ত পরিবেশ
স্টুডেন্টস গার্ডেন সর্ম্পূণ রাজনীতি মুক্ত, ধূমপানমুক্ত, মাদক মুক্ত, একটি অসাম্প্রদায়িক ছাত্র হোস্টেল। হোস্টেলের ভিতরে বা বাহিরে কোনভাবেই ধূমপান / মাদক সেবন করা যাবে না। যে সকল ছাত্র ধূমপান/ মাদক সেবন করে তাদের এই হোস্টেলে ভর্তির জন্য আবেদন করার কোন প্রয়োজন নেই। কোন ছাত্র যদি হোস্টেলের বাহিরে অথবা ভিতরে ধূমপান/ মাদক সেবন করেন এবং হোস্টেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবহিত হয়। তাহলে তাকে হোস্টেল থেকে তৎক্ষণাৎ বহিষ্কার করা হবে এক্ষেত্রে কোন ধরনের ওজর আপত্তি চলিবে না।
প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য
প্রথম বর্ষের ছাত্ররা স্থায়ীভাবে হোটেল ত্যাগ করতে চাইলে তিন মাস পূর্বে হোস্টেল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ভর্তি বাতিল ফরম সংগ্রহ করে তা নিজ হাতে পূরণ করে হোস্টেল কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে। অন্যথায় তিন মাসের সিট ভাড়া দিয়ে হোস্টেল ত্যাগ করতে হবে।এক্ষেত্রে কোন ধরনের ওজর আপত্তি চলিবে না।
দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রদের জন্য
বি.দ্র: দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্ররা এক বছর যাবৎ হোস্টেলে অবস্থান করিতেছে এবং তারা হোস্টেলের সকল বিষয় সর্ম্পকে অবহিত আছে যেমন: হোস্টেলের খাবার, পড়াশোনার ও থাকার পরিবেশ ,অন্যান্য সকল সুযোগ- সুবিধা ইত্যাদি সম্পর্কে তারা সম্পূর্ণ রুপে ওয়াকিবহাল আছে। তাই সে যদি ২য় বর্ষে অবস্থান করতে চায় তাহলে তাকে পুরো ২য় বর্ষ অবস্থান করতে হবে।
**উপরিউক্ত সকল নিয়ম-শৃঙ্খলা শিক্ষার্থীকে ভবিষ্যৎ জীবনে একজন শৃঙ্খলাবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিতে পরিণত করবে, শৃঙ্খলা মানুষকে সমৃদ্ধির দিকে ধাবিত করে ও নৈতিক-চরিত্র গঠন এবং পড়াশোনা মান উন্নয়নে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে তাতে কোন ধরনের সন্দেহ নেই । নিয়ম শৃঙ্খলা ভাঙ্গার ফল সর্বদাই অশুভ। ব্যক্তি জীবনে কিংবা জাতীয় জীবনে যে কোনো নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী। নিয়মানুবর্তিতা ছাড়া জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। এক কথায় জীবনের সর্বক্ষেত্রে শৃঙ্খলা রক্ষা করা একান্ত অপরিহার্য। শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতার সাথে কাজ করলে অবশ্যই সফল হওয়া যায়। কাজেই প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হোস্টেলের সকল নিয়ম-শৃঙ্খলা শতভাগ পালন করতে হতে হবে। কিন্তু কেহ যদি উক্ত নিয়ম-শৃঙ্খলা পালন করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে তার এই হোস্টেলে ভর্তির জন্য আবেদন করার কোন প্রয়োজন নেই। উপরিউক্ত কোন একটি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তাকে তৎক্ষণাৎ হোস্টেল থেকে বহিস্কার করা হবে।